রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
টেকনাফ সৈকতে গোসলে নেমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২ বুদ্ধাঙ্ক (IQ) এর পরিমাপ অনুযায়ী প্রতিভাবান শিশুদের বুদ্ধাঙ্ক মাত্রা চকরিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ জীবন সংগ্রামি লাইলার কম মূল্যের সবজির দোকান শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ নেয়ার ভিডিও ভাইরাল মিয়ানমারে বিস্ফোরণে মুহুর্মুহু শব্দ, টেকনাফের বসত ঘরের আঙ্গিনায় এসে পড়েছে গুলি মাকে কুপিয়ে হত্যার পর থানা এসে হাজির যুবক টেকনাফ ছাড়াও এবার নতুন করে উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ চকরিয়ায় জেলা পরিষদের জমিতে নির্মিত আওয়ামী লীগের অফিস উচ্ছেদ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন নিয়ন্ত্রণ ও জাহাজ ছাড়ার পয়েন্ট নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি গঠণ

কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কবিতা মেলা নিয়ে হাসান মুরাদ ছিদ্দিকীর প্রতিক্রিয়া

কক্সবাজার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কবিতা মেলার সফলতা যেমন আছে তেমনি ব্যর্থতাও আছে। কবি কামরুল হাসান ভরকেন্দ্রে থেকে যে কবিতা মেলার আয়োজন করে আসছেন তাতে তাঁর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব সবাইকে মুগ্ধ করেছে।

কিন্তু মেলার কিছু অসংলগ্নতা নিয়েও অনেকের বিরূপ মন্তব্য আছে, সেটি আমারও। এই বারের মেলায় বিদেশী কবি বলে যাদের নিয়ে আসা হয়েছে, যাকে মঞ্চের মাঝখানে বসিয়ে বারবার সন্মান দেয়া হয়েছে সেই পিয়ারী আপা কতটুকু মানসন্মত কবি অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। সুদূর জার্মান থেকে তাকে না আনলেও মেলার তেমন সৌন্দর্য নষ্ট হত না। কবি শহিদ কাদরিকে যে অর্থে মূল্যবান কবি হিসাবে শনাক্ত করা যায় সেই অর্থে পিয়ারী কবি হিসাবে উল্লেখযোগ্য নন। তিনি পরিচিতি পেয়েছেন শহিদ কাদরির সাথে যুক্ত থাকার কারণে। কিন্তু নির্মম সত্য হল, শহিদ কাদরিকে একা রেখে পিয়ারী বাসর সাজিয়েছেন অন্য ঘরে। নাম বেঁচে চলেছেন শহিদ কাদরির। পিয়ারী আপাকে কারা কিভাবে বেঁচতে চান এখন দেখার বিষয়।
ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে কবি উপাধী ধারণ করে যারা কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন, কবি নুরুল ইসলাম ও কবি অবশেষ দাসকে বাদ দিলে, তাদের প্রায় সকলে বাংলাদেশের চতুর্থ শ্রেণির কবিদের তালিকায় থাকবেন। এই মানের কবিদের দাওয়াত করে এদেশে নিয়ে আসার কোন মানে হয় না।
ঢাকা, ময়মনসিং থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে যারা মেলার নামে কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন তাদের কবিসত্ত্বা নিয়ে দারুণ প্রশ্ন জেগেছে সবার। তারা কি আদৌ কবি, লেখক? যে উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য কবিতা মেলার আয়োজন করা হয় সেই উদ্দেশ্য যদি ব্যাহত হয় তাহলে মেলা করলেও কি না করলেও কি। আগত কবিদের চিন্তা, ভাঙন ও বাঁকবদলের সাথে এখানকার কবিরা পরিচিত হবেন সেটার যদি ব্যত্যয় ঘটে তাহলে কবিতা মেলার অর্জনটা কী?

থাকা, খাওয়া ও বেড়ানো যদি কবিদের প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে থাকে তাহলে আমাদের বলার তেমন কিছু নেই। বিভিন্ন ইভেন্টে পরিচিত ও মুখ দেখে কবিতা পড়তে দেয়ার বিষয়টি দৃষ্টিকটু ঠেকেছে। আমি ছাড়া কবিতা উৎসবে যারা যান তারা একটি কবিতা পড়ার উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য যান। তারা মনে করেন যে, একটি কবিতা যদি সকলের সামনে মঞ্চে পড়া যায় রাতারাতি কবিখ্যাতি পাবেন। এটি বাংলাদেশের কবিদের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই অভ্যাস তাদের যেমন ডুবাচ্ছে তেমনি তাদের যারা অনুসরণ করছে তাদেরও প্রভাবিত করছে। এই বাজে অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। কবিতা মেলায় কবি/লেখকদের চাইতে অকবি ও অলেখকদের প্রতাপ চোখে পড়ার মত। তাদের ভিড়ে প্রকৃত কবি/লেখকদের অসহায় হতে দেখেছি। ভবিষ্যতে প্রকৃত ও মৌলিক লেখকরা যদি অবহেলিত হন তাহলে উৎসব ক্রমশঃ তার উজ্জ্বলতা হারাবে এবং এই উৎসব অলেখকদের উৎসবে পরিণত হবে। অলেখকদের নিয়ে কবিতা মেলা করে অনেকে তাদের গ্রহণযোগ্যতা তলানীতে পৌঁছে দিয়েছেন।

অকবি/অলেখকদের রাতারাতি কবি ও লেখক বানাতে গিয়ে এবং প্রকৃত লেখকদের মূল্যয়ন না করার কারণে অনেকেই এখন কক্সবাজারে অপাংক্তেয়। প্রকৃত ও মৌলিক লেখকরা যদি যথাযথ মর্যাদা না পান এত আয়োজন করেও কোন লাভ হবে না।

সংখ্যায় কম হোক কিন্তু দেশ বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ কবিদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করা হলে এই আয়োজন ইতিহাসের পালক হিসাবে খ্যাতি পাবে। কবি নামধারী আবর্জনা দিয়ে সংখ্যায় বেশি উপস্থিতির চাইতে তাৎপর্যপূর্ণ লেখকদের উপস্থিতি যদি বাড়ানো যায়, যাদের কাছ থেকে আমরা শিখতে পারব তাহলে এই আয়োজন একদিন দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচনা তৈরি করবে।

হাসান মুরাদ ছিদ্দিকী : কবি ও প্রাবন্ধিক।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888